যে দেশে ঘুম ভাঙলেই বদলে যায় নাগরিকত্ব

ছবি:সংগৃহীত

 

এমন ঘটনা কখনো শুনেছেন, যেখানে আপনি এক দেশে ঘুমালেন কিন্তু ঘুম ভাঙার পর অন্য দেশের নাগরিক হয়ে গেলেন। না কোনো টাইম ট্রাভেল বা রূপকথার গল্প বলছি না। বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটে ফিজান্ট দ্বীপের বাসিন্দাদের সঙ্গে। ৬ মাস অন্তর তাদের নাগরিকত্ব বদলে যায়।

 

ফিজান্ট দ্বীপটি ফ্রান্স ও স্পেনের সীমান্তে অবস্থিত। দুই দেশের সীমানা ভাগ করে নেয়। দ্বীপের বাসিন্দাদের নাগরিকত্ব নিয়ে স্পেন ও ফ্রান্সের মধ্যে হয়েছে একটি চুক্তি। সেই চুক্তি অনুযায়ী ফিজান্ট দ্বীপের বাসিন্দাদের ছয় মাস অন্তর অন্তর পরিবর্তন হয় নাগরিকত্ব। প্রথম ছয় মাস তারা যদি ফ্রান্সের অধীনে থাকেন, পরের ছয় মাস স্পেনের নাগরিক তারা।

 

ফ্রান্স ও স্পেনের উত্তর অংশে একটি নদীর ক্ষুদ্রতম দ্বীপ এই ফিজান্ট। দৈর্ঘ্যে মাত্র ২০০ মিটার এবং প্রস্তে ৪০ মিটার। এই ক্ষুদ্র দ্বীপটিকে নিয়ে একসময় দুই দেশের মধ্যে হয়েছিল তীব্র লড়াই। এরপরেই সমস্যা সমাধানে ১৬৫৯ সালে হয়েছিল একটি চুক্তি। ফ্রান্স ও স্পেনের মধ্যে ওই চুক্তি পাইরেনিস চুক্তি হিসেবে খ্যাত।

চুক্তির শর্ত মেনে ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন স্পেনের রাজা চতুর্থ ফিলিপের কন্যার সঙ্গে। এরপর ফিজান্ট দ্বীপের ছয় মাস শাসনের অধিকার ভাগ করে নেয় দুই বিবদমান দেশ। সেই অনুযায়ী ফ্রেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দ্বীপের উপর কায়েম থাকে স্পেনের। আগস্ট থেকে জানুয়ারি ফ্রান্সের।

 

আগে কয়েকজন মানুষ দ্বীপে থাকলেও, এখন দ্বীপটি জনমানবহীন। দুই দেশের টানাপোড়েনের জেরে অনুন্নয়ন সর্বত্র। নেই কোনো পরিবহণ ব্যবস্থা। ফলে দ্বীপে যাওয়া একটি চ্যালেঞ্জের। তবে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে দ্বীপটি ভ্রমণের জন্য খুলে দেওয়া হয় পর্যটকদের।

পৃথিবীর সব দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়ম কিন্তু ভিন্ন। সাধারণত দেশের মধ্যে জন্মানো সব নাগরিক, সেই দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে থাকেন। কোনো কোনো দেশ আবার অন্য দেশের নাগরিকদের শর্তসাপেক্ষে দিয়ে থাকেন নাগরিকত্ব। অর্থাৎ দ্বৈত নাগরিকত্বের প্রায় সুযোগ। তবে স্পেন ও ফ্রান্সের সীমানায় অবস্থিত ফিজান্ট দ্বীপ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম খানিকটা।  সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নির্বাচন কমিশন অপেশাদার আচরণ করছে: সাদিক কায়েম

» ক্যাসিনো কাণ্ডে আলোচিত সেলিম প্রধানকে আটক করেছে পুলিশ

» নির্বাচন ব্যবস্থা হাসিনা ভাঙেনি, ভেঙেছে তার বাপ প্রথম ভোট চোর ও ব্যাংক ডাকাত শেখ মুজিব: দুদু

» জাতীয় পার্টির অফিস ভাঙচুরের সঙ্গে গণঅধিকার জড়িত নয়: রাশেদ খান

» যারা গালির স্লোগান দিচ্ছে তারাই জেনজিদের প্রতিনিধিরা, এরকম গালি শুনব তা কল্পনাও করতে পারিনি: নিলোফার চৌধুরী

» নির্বাচন নয়, আ. লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে: উপদেষ্টা আসিফ

» অস্ত্র ও গুলিসহ ৪ বনদস্যু আটক

» বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা

» একাদশে চূড়ান্ত ভর্তি শুরু রোববার

» বাকখালী নদী অবশ্যই অবৈধ দখল মুক্ত করা হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যে দেশে ঘুম ভাঙলেই বদলে যায় নাগরিকত্ব

ছবি:সংগৃহীত

 

এমন ঘটনা কখনো শুনেছেন, যেখানে আপনি এক দেশে ঘুমালেন কিন্তু ঘুম ভাঙার পর অন্য দেশের নাগরিক হয়ে গেলেন। না কোনো টাইম ট্রাভেল বা রূপকথার গল্প বলছি না। বাস্তবেই এমন ঘটনা ঘটে ফিজান্ট দ্বীপের বাসিন্দাদের সঙ্গে। ৬ মাস অন্তর তাদের নাগরিকত্ব বদলে যায়।

 

ফিজান্ট দ্বীপটি ফ্রান্স ও স্পেনের সীমান্তে অবস্থিত। দুই দেশের সীমানা ভাগ করে নেয়। দ্বীপের বাসিন্দাদের নাগরিকত্ব নিয়ে স্পেন ও ফ্রান্সের মধ্যে হয়েছে একটি চুক্তি। সেই চুক্তি অনুযায়ী ফিজান্ট দ্বীপের বাসিন্দাদের ছয় মাস অন্তর অন্তর পরিবর্তন হয় নাগরিকত্ব। প্রথম ছয় মাস তারা যদি ফ্রান্সের অধীনে থাকেন, পরের ছয় মাস স্পেনের নাগরিক তারা।

 

ফ্রান্স ও স্পেনের উত্তর অংশে একটি নদীর ক্ষুদ্রতম দ্বীপ এই ফিজান্ট। দৈর্ঘ্যে মাত্র ২০০ মিটার এবং প্রস্তে ৪০ মিটার। এই ক্ষুদ্র দ্বীপটিকে নিয়ে একসময় দুই দেশের মধ্যে হয়েছিল তীব্র লড়াই। এরপরেই সমস্যা সমাধানে ১৬৫৯ সালে হয়েছিল একটি চুক্তি। ফ্রান্স ও স্পেনের মধ্যে ওই চুক্তি পাইরেনিস চুক্তি হিসেবে খ্যাত।

চুক্তির শর্ত মেনে ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন স্পেনের রাজা চতুর্থ ফিলিপের কন্যার সঙ্গে। এরপর ফিজান্ট দ্বীপের ছয় মাস শাসনের অধিকার ভাগ করে নেয় দুই বিবদমান দেশ। সেই অনুযায়ী ফ্রেব্রুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত দ্বীপের উপর কায়েম থাকে স্পেনের। আগস্ট থেকে জানুয়ারি ফ্রান্সের।

 

আগে কয়েকজন মানুষ দ্বীপে থাকলেও, এখন দ্বীপটি জনমানবহীন। দুই দেশের টানাপোড়েনের জেরে অনুন্নয়ন সর্বত্র। নেই কোনো পরিবহণ ব্যবস্থা। ফলে দ্বীপে যাওয়া একটি চ্যালেঞ্জের। তবে বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে দ্বীপটি ভ্রমণের জন্য খুলে দেওয়া হয় পর্যটকদের।

পৃথিবীর সব দেশের নাগরিকত্ব পাওয়ার নিয়ম কিন্তু ভিন্ন। সাধারণত দেশের মধ্যে জন্মানো সব নাগরিক, সেই দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে থাকেন। কোনো কোনো দেশ আবার অন্য দেশের নাগরিকদের শর্তসাপেক্ষে দিয়ে থাকেন নাগরিকত্ব। অর্থাৎ দ্বৈত নাগরিকত্বের প্রায় সুযোগ। তবে স্পেন ও ফ্রান্সের সীমানায় অবস্থিত ফিজান্ট দ্বীপ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম খানিকটা।  সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com